‘বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক এন্ড হেলথ সার্ভে ২০১৪’-এর চট্টগ্রাম বিভাগীয়
অবহিতকরণ সেমিনার বক্তারা বলেছেন, মাতৃস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম
বিভাগের অগ্রগতি সন্তোষজনক। চট্টগ্রাম বিভাগে গত ৩ বছরে গর্ভকালীন সেবা
গ্রহণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ ত বা
অপ্রশিক্ষণপ্রাপ ্ত যেকোন সেবাদানকারীর কাছ থেকে কমপক্ষে একবার গর্ভকালীন সেবা গ্রহণের হার ৬৩ থেকে ৭৫ শতাংশে-এ উন্নীত হয়েছে। এ সময়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ ত
সেবাদানকারীর কাছ থেকে কমপক্ষে ১বার গর্ভকালীন সেবা গ্রহণের হার বেড়েছে ১১
শতাংশ। তবে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা স্বত্ত্বেও কমপক্ষে চারবার
গর্ভকালীন চেকআপের হার বেড়েছে কিছুটা কম, ৬ শতাংশ।
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) এর উদ্যোগে গতকাল রবিবার বিএমএ চট্টগ্রামের মিলনায়তনে সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নিপোর্টের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন এনডিসি। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা এনডিসি। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মো. নূরুল আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক (এমসি-আরএইচ) ডা. মোহাম্মদ শরীফ, চট্টগ্রাম বিভাগের সহকারী পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. সালাহউদ্দিন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিপোর্টের পরিচালক (গবেষণা) মো. রফিকুল ইসলাম সরকার।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা এনডিসি বলেন, সুস্থ মা ও সুন্দর শিশু বাংলাদেশের উজ্জ্বল আগামীর প্রতীক। সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার কাজ করছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা দান এ প্রতিশ্রুতি পূরণে একটি অনন্য নজির হিসেবে দেশে বিদেশে প্রশংসিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক হেলথ সার্ভে কর্মসূচির জন্য একটি মাইলফলক, যা বলে দেয় আমরা কোথায় আছি, কোথায় যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নিপোর্টের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন এনডিসি বলেন, মা ও শিশু স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিভাগের সাম্প্রতিক সাফল্য প্রশংসার দাবি রাখে। তবে অনেক ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম এখনো জাতীয় হারের চেয়ে পিছিয়ে আছে। তিনি চট্টগ্রাম বিভাগে স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণের অসম্পূর্ণ কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য কর্মকর্তা ও কর্মীবাহিনীকে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগে পরিবার পরিকল্পনার অপূর্ণ চাহিদা পূরণে আরও আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যাশায় স্বাস্থ্যবান প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য মা ও শিশু পুষ্টি নিশ্চিত করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে চট্টগ্রাম বিভাগে কর্মরত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জেলা, উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচ ারি,
এনজিও কর্মকর্তা এবং মহিলা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানগণ অংশগ্রহণ করেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন নিপোর্ট-এর
তত্ত্বাবধানে ইউএসএইড/ বাংলাদেশ-এর
আর্থিক সহায়তায় এ সার্ভে পরিচালনা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আইসিএফ
ইন্টারন্যাশনাল এ সার্ভের কাজে কারিগরি সহায়তা প্রদান করে।
সেমিনারে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক এ- হেলথ সার্ভে ২০১৪ এর ফলাফল তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে মহিলা প্রতি গড় সন্তান সংখ্যা বা টিএফআর ২ দশমিক ৩। চট্টগ্রাম বিভাগে বর্তমান টিএফআর ২ দশমিক ৫। গত এক দশকে চট্টগ্রাম বিভাগে মহিলা প্রতি গড় সন্তান সংখ্যা ১ সন্তান হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে ৬২ শতাংশ দম্পতি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এদের মধ্যে ৫৪ শতাংশ দম্পতি আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করেন। চট্টগ্রাম বিভাগে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারের হার ৪৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে গত ৩ বছরে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির ব্যবহার ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে খাবার বড়ির ব্যবহার ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও দীর্ঘ মেয়াদী ও স্থায়ী পদ্ধতির ব্যবহার ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
সার্ভে রিপোর্টে আরো বলা হয়, গত ৩ বছরে চট্টগ্রাম বিভাগে দক্ষ প্রসব সেবার ব্যবহারের হার ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসব বেড়েছে ১০ শতাংশ এবং সিজারিয়ান প্রসব বেড়েছে ৪ শতাংশ। দেশে সিজারিয়ান প্রসবের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ১০ বছরে সিজারিয়ান প্রসবের হার ৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৩ শতাংশ প্রসব সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। সারাদেশে ৩৭ শতাংশ প্রসব হয় হাসপাতাল বা ক্লিনিকে। আর এসব প্রসবের ৬০ শতাংশই হলো সিজারিয়ান প্রসব। প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সম্পাদিত ৮০ শতাংশ প্রসবই হয় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হলো সিজারিয়ান প্রসবের হার ১৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা। চট্টগ্রাম বিভাগে সিজারিয়ান প্রসবের হার বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি, ১৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে বর্তমানে বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম এমন শিশুদের হার ৩৮ শতাংশ এবং বয়সের তুলনায় ওজন কম এমন শিশুদের হার ৩৬ শতাংশ। গত ৩ বছরে বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম এমন শিশুদের হার ৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এ সূচকের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিভাগ এইচডিএনএসডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগে আন্ডার-ওয়েট বা বয়সের তুলনায় কম ওজনের শিশুদের হার এখনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ শতাংশ বেশি। গত ৩ বছরে এক্ষেত্রে তেমন অগ্রগতি হয়নি।
অপ্রশিক্ষণপ্রাপ
জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) এর উদ্যোগে গতকাল রবিবার বিএমএ চট্টগ্রামের মিলনায়তনে সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নিপোর্টের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন এনডিসি। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা এনডিসি। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মো. নূরুল আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক (এমসি-আরএইচ) ডা. মোহাম্মদ শরীফ, চট্টগ্রাম বিভাগের সহকারী পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. সালাহউদ্দিন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিপোর্টের পরিচালক (গবেষণা) মো. রফিকুল ইসলাম সরকার।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা এনডিসি বলেন, সুস্থ মা ও সুন্দর শিশু বাংলাদেশের উজ্জ্বল আগামীর প্রতীক। সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার কাজ করছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা দান এ প্রতিশ্রুতি পূরণে একটি অনন্য নজির হিসেবে দেশে বিদেশে প্রশংসিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক হেলথ সার্ভে কর্মসূচির জন্য একটি মাইলফলক, যা বলে দেয় আমরা কোথায় আছি, কোথায় যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নিপোর্টের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন এনডিসি বলেন, মা ও শিশু স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিভাগের সাম্প্রতিক সাফল্য প্রশংসার দাবি রাখে। তবে অনেক ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম এখনো জাতীয় হারের চেয়ে পিছিয়ে আছে। তিনি চট্টগ্রাম বিভাগে স্বাস্থ্য সেবা সম্প্রসারণের অসম্পূর্ণ কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য কর্মকর্তা ও কর্মীবাহিনীকে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগে পরিবার পরিকল্পনার অপূর্ণ চাহিদা পূরণে আরও আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যাশায় স্বাস্থ্যবান প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য মা ও শিশু পুষ্টি নিশ্চিত করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে চট্টগ্রাম বিভাগে কর্মরত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জেলা, উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচ
সেমিনারে বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক এ- হেলথ সার্ভে ২০১৪ এর ফলাফল তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে মহিলা প্রতি গড় সন্তান সংখ্যা বা টিএফআর ২ দশমিক ৩। চট্টগ্রাম বিভাগে বর্তমান টিএফআর ২ দশমিক ৫। গত এক দশকে চট্টগ্রাম বিভাগে মহিলা প্রতি গড় সন্তান সংখ্যা ১ সন্তান হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে ৬২ শতাংশ দম্পতি পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। এদের মধ্যে ৫৪ শতাংশ দম্পতি আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করেন। চট্টগ্রাম বিভাগে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারের হার ৪৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে গত ৩ বছরে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির ব্যবহার ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে খাবার বড়ির ব্যবহার ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও দীর্ঘ মেয়াদী ও স্থায়ী পদ্ধতির ব্যবহার ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
সার্ভে রিপোর্টে আরো বলা হয়, গত ৩ বছরে চট্টগ্রাম বিভাগে দক্ষ প্রসব সেবার ব্যবহারের হার ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসব বেড়েছে ১০ শতাংশ এবং সিজারিয়ান প্রসব বেড়েছে ৪ শতাংশ। দেশে সিজারিয়ান প্রসবের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ১০ বছরে সিজারিয়ান প্রসবের হার ৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৩ শতাংশ প্রসব সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়। সারাদেশে ৩৭ শতাংশ প্রসব হয় হাসপাতাল বা ক্লিনিকে। আর এসব প্রসবের ৬০ শতাংশই হলো সিজারিয়ান প্রসব। প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সম্পাদিত ৮০ শতাংশ প্রসবই হয় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হলো সিজারিয়ান প্রসবের হার ১৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা। চট্টগ্রাম বিভাগে সিজারিয়ান প্রসবের হার বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি, ১৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে বর্তমানে বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম এমন শিশুদের হার ৩৮ শতাংশ এবং বয়সের তুলনায় ওজন কম এমন শিশুদের হার ৩৬ শতাংশ। গত ৩ বছরে বয়সের তুলনায় উচ্চতা কম এমন শিশুদের হার ৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এ সূচকের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিভাগ এইচডিএনএসডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগে আন্ডার-ওয়েট বা বয়সের তুলনায় কম ওজনের শিশুদের হার এখনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ শতাংশ বেশি। গত ৩ বছরে এক্ষেত্রে তেমন অগ্রগতি হয়নি।

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন